২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
হঠাৎ করে দেশে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। রাজধানীর নাগরিকদের মধ্যে সন্ধ্যা নামতেই ভীতি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাসিনা পালানোর পর পুলিশ সদস্যরা থানায় যোগদান না করায় আইন শৃঙ্খলার যে অবনতি ঘটেছিল বর্তমান পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ। থানা পুলিশের কার্যক্রম ও তৎপরতা দেখতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভোরেই থানায় হাজির হচ্ছেন। অপরাধ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ‘পরিকল্পিতভাবে আইন শৃঙ্খলার অবনতি’ করা হচ্ছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তবে দেরিতে হলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেন, ছয়-সাত মাসে পুলিশের যেভাবে একটু ঠিক হওয়া উচিত ছিল সেটি কিন্তু পারেনি। বাস্তবিক অর্থে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি কিন্তু এখনো দেখছি না। আমি মনে করি এই যে পুলিশ যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে-এখনো তারা ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, এখনো এই ধাক্কার মধ্যেই যাচ্ছে। কোথাও গেলে মানুষজন অপমান করে, কোথাও গেলে কেউ তাদের কথা শুনতে চায় না। উল্টো কেউ কেউ পুলিশের ওপর চড়াও হয়।
এই যে, পুলিশের moral যে ডাউনটা হয়েছে- সেখান থেকে তাদেরকে টেনে উঠাতে হবে। ঢাকাসহ সারাদেশে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষাপটে অপরাধের লাগাম টানতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এরই মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী গঠন করে টার্গেট এলাকায় জোরদার অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৫ শতাধিক তল্লাশি চৌকি এবং অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজিসহ নৈরাজ্য চললেও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কেউ নেই। ক্রমাগত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। যৌথ বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে মাঠ পর্যায় অস্ত্রধারীদের সঙ্গে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধ দমনে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের সচেতনতা বাড়াতে হবে। পুলিশি ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে হবে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অপরাধীদের দমানো না গেলে অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। এই মুহূর্তে অপরাধ মোকাবিলায় পুলিশের কঠোর অভিযান ও সক্রিয়তা জরুরি। পুলিশের উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে।