বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ন

গণতন্ত্রের উত্তরণে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই: দুদু

রিপোটারের নাম / ৬৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৫৯

গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, কেউ যদি জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে ব্যর্থ হবে সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলছি।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, ‘দেশে একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। যে-সব ছাত্র জনতা অকুণ্ঠচিত্তে নিঃস্বার্থভাবে বুলেট বুকে ধারণ করেছে, জীবনকে উৎসর্গ করেছে, আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করি।’

তিনি বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেঁধেছিল, জীবন ধরনের জন্য অন্তত পক্ষে গত সরকারের আমলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুরুতেই দ্রব্য মূল্যের দাম একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে, সেটির ধারেকাছেও তারা যেতে পারেনি। এ দেশের কৃষক শ্রমিক সব সময় অবহেলিত থেকেছে এবং নির্মমতার শিকার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি গরিব মানুষের দল। বিএনপি খেটে খাওয়া মানুষের দল। কামার, কুমার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। বিএনপি এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানালেও সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ছয়মাস চলে যাওয়ার পরেও ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে।

এ সরকার বাজারদর এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তারা দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা শুরুতেই বলেছিলাম সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। বর্তমান সরকার তার সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল, সেটা তারা করতে পারেনি। কিন্তু, এ সরকারকে এখন পর্যন্ত আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি সঠিক পথে থাকার জন্য। হয়ত তারা কিছু কিছুক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হতে পারে, কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো ছাড়া কোনো পথ নেই। কারণ, তারা যদি ব্যর্থ হন তাহলে এর অংশীদার আমাদেরকেও হতে হবে। সরকারের সমালোচনার কারণ হলো, তারা যাতে সফল হয়। এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছেন। বলতেই পারে! সকল রাজনৈতিক দলতো স্বাধীন। সকল রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। তারা যদি মনে করে যে, সংস্কার দরকার, সেই কথা তারা বলতে পারে। আমার কাছে মনে হয়, নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার করতে পারে। জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার যদি কেউ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে তারা ব্যর্থ হবে। সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, যদি নির্বাচন গ্রহণ না করে, তাহলে তো তিন বছর, চার বছর, পাঁচ বছর পরপর গণঅভ্যুত্থান করতে হবে। আর অন্য আরেক অভ্যুত্থান আছে, যেটা কোনো রাজনৈতিক দল মেনে নিতে পারে না। সেটি হলো সামরিক অভ্যুত্থান। এখন সভ্য পথ হচ্ছে নির্বাচন। সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যারা নির্বাচনের বিষয় নিয়ে এখনো পর্যন্ত একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছেন, নির্বাচনের স্রোতে আসেন, জনগণের পাশে দাঁড়ান। আমার বিশ্বাস জনগণ হয়ত আপনাকেও গ্রহণ করতে পারে।

শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, শয়তানকে সময় মত শেষ না করতে পারলে অর্থাৎ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যদি জনগণের মেন্ডেটপ্রাপ্ত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে শয়তানি ভূমিকায় আরও এগিয়ে যেতে পারে।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ