রাষ্ট্রের নাম ও সংবিধানের মূল নীতিমালা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে ১২২ টিতে একমত, ২১ টিতে আংশিক একমত ও ২৩ টি প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত জমা দিয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবনে কমিশন সচিবালয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে বদিউল আলম মজুমদার তা মতামত গ্রহণ করেন। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক মতামত জমা দেন।
কমিশনে পাঠানো চিঠিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, স্প্রেডশিটে যেভাবে উত্তর চাওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, সংস্কারের মধ্য দিয়ে এটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন যে, রাষ্ট্র কোন নাগরিকের মতাদর্শিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়,লিংগীয় পরিচয় ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের জন্য তার নাগরিকদের মধ্যে কোন বৈষম্য করবে না। একইসাথে এই সংবিধান নাগরিকদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকারের এমন সুরক্ষা নিশ্চিত করবে যা সাংবিধানিক বা প্রশাসনিক কোন আইন,বিধি বা অধ্যাদেশ দিয়ে বাতিল,সংকুচিত বা স্থগিত রাখতে পারবেনা।
তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে সরকার পরিবর্তনে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। অনেক দিন ধরেই গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা টাকার খেলায় পর্যবসিত হয়েছে। এরফলে সংসদ অনেকটা বিত্তবানদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। অথচ নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবে টাকার খেলা বন্ধে নির্দিষ্ট কোন প্রস্তাব নেই।
সাইফুল হক বলেন, আমরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও এক্তিয়ার কমানোর পক্ষে নই। স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশন যাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করা দরকার।
তিনি বলেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাষ্ট্রের নাম ও সংবিধানের মূল নীতিমালা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষেই মতামত দিয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি স্বাধীনতার ঘোষণায় উল্লেখিত – সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকেও যুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছে।তিনি জানান,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সসম্প্রসারণের পক্ষে মতামত দিয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বয়স ২৫ বছর বহাল রাখা; উচ্চতর কক্ষে ১৫০ আসন নির্ধারণ করে সংখ্যানুপাতিক হারে আসন নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়েছে।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে জাতীয় সমঝোতা গড়ে তোলার এক অসাধারণ সুযোগ তৈরী হয়েছে উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যেহেতু অনেক আগে থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে সে কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ তুলনামূলক সহজ হয়েছে। বিশেষ কোন পক্ষ অবলম্বন না করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কারের প্রশ্নে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এগুলে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ সহজতর হবে। এক্ষেত্রে চাপাচাপি করতে গেলে যেটুকু অর্জন করা যেত তাও হয়তো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।