প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৫, ২৩: ৩৩
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন বিলম্ব করানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হচ্ছে। এটি সত্য নয়। শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
এএফপিকে নাহিদ আরও বলেন, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে এখনো সমস্যার মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব নয়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে পরিচিত হয়ে ওঠা নেতৃত্বের মধ্যে অন্যতম নাহিদ ইসলাম। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে যোগ দেন তিনি। গত সপ্তাহে সরকার থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ। এরপর তার নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ হয় তরুণদের নতুন দল এনসিপি।
এএফপিকে সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। অভ্যুত্থানে তরুণরা যে কারণে জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেসব সংস্কারেও আগ্রহী নন তারা।
নিজেদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, তিনি ও তার দলের নেতারা যদি আগামী সরকার গঠন করতে না-ও পারেন, তারপরও তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করবেন, যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাব বজায় রাখবে।
তিনি বলেন, কেউই জানত না একটি অভ্যুত্থান হবে, তবে এটি হয়েছে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে এ নির্বাচনই পৃথিবীর শেষ নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো এ শক্তিকে আরো ৫০ অথবা ১০০ বা এর বেশি বছর টিকিয়ে রাখা।
জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করেন এমন সব মতাদর্শের মানুষের জন্য নিজেদের দলকে উন্মুক্ত রেখেছে এনসিপি। তবে গত মাসে প্রতিষ্ঠার পর দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় আলোচনার সৃষ্টি করেছে। দল গঠনের পর এনসিপির কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার সংযোগের তথ্য প্রকাশ পেলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিতে বিশ্বাস করি। তবে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আচার অনুসারে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নারীদের নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে এসেছি এবং সমাজের সব গোষ্ঠী ও বিশ্বাসের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছি।’