স্বৈরাচার বিরোধী জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও আন্দোলন দমনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আওয়ামীপন্থি ১২ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র আন্দোলনে সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, নির্যাতন-সহিংসতায় সম্পৃক্ততা এবং আওয়ামী সরকারের দলীয় এজেন্ট বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরখাস্তকৃত শিক্ষকগণ হলেন- অধ্যাপক ড. মো: হারুন-উর-রশিদ, ড. দেবু কুমার ভট্টাচার্য, অলি আহাদ সেতু, অধ্যাপক ড. শরমিন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. আয়েশা আক্তার, রুহুল আমিন, চৈতি দে পূজা, ড. ছাবেরা ইয়াছমীন, মো. ওমর আলী মল্লিক, অধ্যাপক ড. শাহ জহির রায়হান ও মো. জিয়াউর রহমান ভূঁঞা।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশিদ ভূইয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জুলাই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান এবং কার্যক্রমের তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
তদন্তে গঠিত কমিটির পর্যবেক্ষণে অভিযুক্তদের দলীয় আনুগত্যের মাধ্যমে প্রশাসনের সহায়তায় আন্দোলন দমন এবং শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার তথ্য উঠে আসে। এছাড়াও, তদন্ত প্রতিবেদনে আরও কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিলো ওই কমিটি। জানা যায়, তদন্তে ১০০ জন শিক্ষক, ৩০ জন কর্মকর্তা এবং আন্দোলনে সম্পৃক্ত শতাধিক শিক্ষার্থীর তথ্য এবং ২০ জন শিক্ষক, ১৫ জন কর্মকর্তা ও ৩৫ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরকৃত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ চূড়ান্ত ভাবে যাচাই করা হয়।
বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির সুপারিশক্রমে ১২ জন শিক্ষক, ৭ কর্মকর্তা ও ১১ জন কর্মচারী কে চাকুরি থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। সিন্ডিকেট থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয় যাদের চূড়ান্ত তদন্তে উক্ত সিদ্ধান্ত স্থায়ীভাবে কার্যকর করা হবে।