বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ন

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলায় জামিনের আদেশ ১০ এপ্রিল

রিপোটারের নাম / ৪৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৭: ২২

তৃতীয় দফায় পিছিয়ে গেলো পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলায় ২৩৯ জনের বিডিআর জওয়ানের জামিনের আদেশ। আগামী ১০ এপ্রিল জামিন শুনানির আদেশ ও সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

সোমবার বিকেলে জামিনের আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া।

বারবার জামিন আদেশ পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ২৩৯ জনের মধ্যে ১৫০ জনের বেশি আসামির জামিনের আবেদন ডাবল পড়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন চাওয়ায় মামলার নথিপত্র যাচাই-বাছাই করতে আদালতের বেগ পেতে হচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের শুনানি করেন। ওই দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবু সাঈদ খান। এরপর তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, গত ১৩ মার্চ বিডিআর হত্যা মামলায় সাজার মেয়াদ পূর্ণ করা আসামদিরে মধ্যে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২৩৯ বিডিআর জওয়ানের জামিনের শুনানি শেষে হয়। ওই দিন বিকেলে আদেশ না দিয়ে রবিবার যাচাই বাছাই শেষে জামিন বিষয়ে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছিলেন আদালত। তবে রবিবার আদেশ না দিয়ে আবার সোমবারের তারিখ ঠিক করেন বিচারক। এদিনও তারিখ পিছিয়ে আগামি ১০ এপ্রিল জামিন আদেশ ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার জামিনের আদেশ নিতে আদালত প্রাঙ্গনে ভিড় করেন বিডিআর জাওয়ানদের স্বজনরা। এ সময় কারাগারে থাকা জাওয়ানদের জামিনের আবেদন জানান তারা।

গত ১৯ জানুয়ারি পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলায় ৮৩৪ জন আসামির মধ্যে ১৭৮ জন জামিন পেয়েছেন। পরে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তারা। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২৮৭ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে যায়।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।

হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে, হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

এদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজও শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।

ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

বিষয়:


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ