যাকাত মানুষকে স্বস্তি দিতে আসলেও মানুষ সেটাকে কঠিন করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘দেশের এক গবেষণা অনুযায়ী, সঠিকভাবে যাকাত আদায় এবং বিতরণ করা গেলে ছয় থেকে সাত বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সব মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর ৫৬ বছর চলে গেছে এখনো দেশের মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারেনি।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টু রোডের শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনডিএফ’র জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।
জামায়াত আমীর বলেন, ‘আমরা এমনভাবে যাকাত আদায় করবো যাতে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হয়। যাকাতের সঠিক ব্যবহার না থাকায় সমাজের কিছু লোক সবকিছু খেয়ে একেবারে ধনী হয়ে যাচ্ছে, উল্টো দিকে কেউ একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। মাঝে কিছু মানুষ থেকে যাচ্ছে, যারা তাদের কষ্টের কথাও কাউকে বলতে পারেন না। এজন্য সবাইকে নিয়ম মেনে যাকাত আদায় করতে হবে।’
চিকিৎসকেরা আল্লাহর পক্ষ থেকে সৌভাগ্যবান জাতি উল্লেখ করে জামায়াত আমীর বলেন, ‘আগে ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা দিতো চিকিৎসকরা, এখন সে সুযোগ নেই। এখন হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক সেবা। ডাক্তারের কাছে রোগীরা সেবার জন্য ছুটে আসেন। আপনি সে সেবা কিভাবে দিচ্ছেন তার হিসেব মিলাতে হবে। রোগীকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া, কাউন্সেলিং করা এবং ঠিকমতো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কিনা তা ভাবতে হবে। ওষুধ লিখার সময় আপনার হাত কোনো বিশেষ কোম্পানির দিকে চলে গেছে কিনা। পরীক্ষা লিখার সময় অবৈধ কোনো কিছু আপনাকে প্রভাবিত করেছে কিনা, এসবকিছুর হিসেব আপনাকে মিলাতে হবে। আপনি রোযাদার, আপনি সারাদিন রোযা রেখেছেন, কিন্তু আপনার এই হিসেব মিলালেন না। সেই রোযা ফেরশতা আপনার মুখের ওপর ছুড়ে মারবে। তারা বলবে এই রোযা নিয়ে আল্লাহর কাছে যেতে পারবেন না। আপনার হিসেব না মিললে আপনার রোযা বৃথা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোরআনকে বন্ধু হিসেবে নিলে প্রতিদিনই কোরআনের সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিটি দিন আমি হয়তো তেলাওয়াত করতে পারবোনা, কিন্তু তার শিক্ষা প্রতিনিয়ত কাজে লাগাতে হবে। আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কটা আরও গভীর হওয়া উচিত। কোরআন ছাড়া যেন আমাদের একটা দিনও না চলে, সে অনুযায়ী দুনিয়ার সব কাজ হওয়া উচিত বলেও জানান জামায়াত আমীর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এনএডিএফ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. এ কে এম ওয়ালিউল্লাহ, অধ্যাপক ডা. আমিনুল হক খান, এনডিএফ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) শাখার সভাপতি ডা. আতিয়ার রহমান, এনডিএফ’র জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, ডা. শাহাদাত হোসেন, ডা. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, এনডিএফ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ডা. এস এম খালিদুজ্জামান, দক্ষিণের সভাপতি ডা. এমজি ফারুক হোসেন প্রমুখ।