ওয়ারিশদের প্রয়োজনে অনেক সময় মৃত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের প্রয়োজন হয়। আগে এ প্রক্রিয়া কিছুটা কঠিন হলেও এবার সেই পদ্ধতি সহজ করা হচ্ছে। এ ধরনের সংশোধনীর ক্ষেত্রে আবেদনটির নথি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), চার নির্বাচন কমিশনার ও সচিবের দপ্তরে যেত এবং তাদের অনুমতি লাগত। তবে বর্তমানে তা লাগবে না। এর পরিবর্তে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালকের (ডিজি) স্বাক্ষরে নিষ্পন্ন হবে। স্পর্শকাতর এ ইস্যুতে নথির দীর্ঘসূত্রতা কমাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এ ছাড়া আইনের ধারাটিও সংশোধন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
খবরের সত্যতা স্বীকার করে এনআইডির ডিজি এ এস এম হুমায়ুন কবির আমার দেশকে বলেন, একজন মানুষ মারা গেলে তার নামটি ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু পুরো তথ্যটি এনআইডি সার্ভারে লক করে সুরক্ষিত থাকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি চাকরিজীবী কিংবা অন্য যে কোনো পেশায় থাকুক, সম্পদ ভাগবাঁটোয়ারা কিংবা পেনশন নিয়ে ওয়ারিশদের ক্ষেত্রে তাদের বাবার এনআইডি যাচাইয়ের অথবা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। এটি আগে কমিশন পর্যায়ে ফাইল যাচাই হয়ে এনআইডির ডিজির দপ্তরের আসত। বর্তমানে কমিশনের কাজটি এ দপ্তরের মাধ্যমে আগের মতো যাচাই-বাছাই শেষে নিষ্পন্ন হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এর ফলে আগে যে কাজটি করতে অনেক দপ্তর ঘোরার কারণে দীর্ঘসময় লাগত, এখন কম সময়ে এ কাজটি হয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন, ২০২৩-এর ৮ ধারায় বলা আছে, মৃত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের প্রয়োজন হলে মৃত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন প্রক্রিয়া সর্বজনীনভাবে উন্মুক্ত না রেখে আইনানুগ উত্তরাধিকার কর্তৃক দাখিল করা প্রতিটি আবেদন কমিশনের সিদ্ধান্তের জন্য নথিতে উপস্থাপন করতে হবে। আবেদনটি কমিশনে অনুমোদিত হলে যথানিয়মে তথ্য সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তথ্যউপাত্ত পুনরায় (ডেথ) স্ট্যাটাসে রাখতে হবে। এরূপ সংশোধনের ক্ষেত্রে সব ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযুক্ত করে কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রয়োজনীয় আপডেট করতে হবে।
এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির জীবিত ওয়ারিশ-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন ডিজি বরাবর হার্ডকপি আকারে আবেদন করতে হতো। এ ছাড়া সংশোধনের ধরন অনুসারে প্রযোজ্য দলিলাদিসহ অনলাইন মৃত্যুসনদ আবশ্যিকভাবে দাখিল করতে হতো। এসব ক্ষেত্রে বিষয়টি নিষ্পন্ন হতে দীর্ঘসময় লাগত। নতুন সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলে কম সময়ে আবেদনকারী সেবা পাবেন। এজন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইনের ধারাটি সংশোধন করতে হবে কমিশনকে।