মাদারীপুর জেলার শিবচরের মো. রায়হান আহমদের শরীরে ১৭টি গুলি নিয়ে বেঁচে আছেন। তিনি সিলেটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
জানা যায়,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন জামিয়া ইসলামিয়া আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.) এর মাদ্রাসার ছাত্র মো. রায়হান আহমেদ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন চরম রূপ ধারণ করে তখন নবম শ্রেণীর ছাত্র রায়হান সামনে থেকেই আন্দোলনে ছিলেন, হঠাৎ কয়েকটি গুলি তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতে পায়ে মাথায় লাগে, রায়হান মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় কয়েকজন লোকের সহায়তায় তাকে মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল নামক একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে লড়ে কিছুটা সুস্থ হলেও, অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছেন রায়হান আহমেদ। মাঝেমধ্যে কিছুই মনে করতে পারেন না তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ‘রায়হান আহমেদ তার নিজ জেলা মাদারীপুরের শিবচরের কেরানীহাট নামক স্থানে ভাড়া বাসায় আছেন। রায়হানের বাবার নাম স্বপন মাদবর, মায়ের নাম শেলী বেগম, তাদের গ্রামের বাড়ি একই উপজেলার কাদিরপুরের ওকুল উদ্দিন মুন্সী কান্দি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে রায়হান বলেন ‘অনেক কিছুই এখন আর আগের মতই মনে করতে পারি না, ওই সময় আমার শরীরে ১৭ টি গুলি লাগে তার মধ্যে আমার মাথায় চারটি গুলি এখনো আছে, আন্দোলনের সময় সামনেই ছিলাম তাই গুলি বেশি লাগে। এখনো আমি ভালো করে মুখ দিয়ে কথা বলতে পারি না,আমি ভালোভাবে হাঁটতে পারি না।’
রায়হানের দাদি দেলোয়ারা বেগম বলেন, ‘রায়হান আন্দোলনের সময় আহত হয়েছে, তার শরীরে ১৭টি গুলি লাগে,আমরা এটাই বেসরকারি হাসপাতালে ১৮ দিন চিকিৎসা করাই,অর্থের অভাবে এখন আর চিকিৎসা করাতে পারছি না। ছেলেটা দিন দিন ভারসাম্যহীন হয়ে যাচ্ছে। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।’
রায়হানের ব্যাপারে কথা হলে স্থানীয় যুবদল নেতা মুহিন বেপারি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই রায়হান খুবই মেধাবী একজন ছাত্র। রায়হানরা দুই ভাই, ওদের বাবা মা কৃষি কাজ করেন। ওদের অন্য কোনো আয়ের ব্যবস্থা নেই তাই আমি স্থানীয় নেতাকর্মীদের বলব আপনারা সকলের রায়হানের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ান।’
জানতে চাইলে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভীন খানম বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা রায়হান আহমেদ কে উন্নত চিকিৎসা যাতে পায় আমরা সেই ব্যবস্থাই করব।’